আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫/০২/২০২৪ ৪:১২ পিএম

মিয়ানমারজুড়ে চলমান সংঘাতের গত তিন দিনে সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর কাছে কয়েকটি সেনা ঘাঁটি এবং ৬২ জন সৈন্য হারিয়েছে জান্তা। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী নিউজ।

মিয়ানমারে সংঘাতে ছবি দেখতে ক্লিক করুন

দখল হওয়া ঘাঁটিগুলো মিয়ানমারের সাগাইং, ম্যাগউই, মান্দালয় জেলা এবং কাচীন ও কারেন প্রদেশে অবস্থিত। কতগুলো ঘাঁটি বিদ্রোহীরা দখলে নিয়েছে, এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জান্তাবিরোধী ২ সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী পিপল’স ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ) এবং এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশন (ইআও) সংঘাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

জান্তার পক্ষ থেকে এখনও এ ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে ইরাবতী জানিয়েছে, পিডিএফ এবং ইআও’র গণমাধ্যম শাখার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে এই সংবাদমাধ্যমটির।

দুই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতারা জানিয়েছেন, গত বছর মিয়ানমারের সাগাইং, ম্যাগউই, মান্দালয় জেলা এবং কাচিন ও কারেন প্রদেশের বেশ কিছু এলাকা দখল করে নিয়েছিল পিডিএফ এবং ইআও জোট। সেই এলাকাগুলো ফের দখল করার জন্য জানুয়ারির শেষদিকে অভিযান শুরু করেছিল জান্তা এবং জান্তা সমর্থক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।

সে অভিযানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাত থেকে কিছু এলাকা পুনর্দখল করতেও সক্ষম হয়েছিল জান্তা এবং জান্তা সমর্থক একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী। কিন্তু গত তিন দিনে জান্তার পুনর্দখল করা অধিকাংশ এলাকা থেকে সেনা সদস্য ও জান্তাপন্থীদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিডিএফ ও ইআও’র নেতারা।

সবচেয়ে বেশি সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন মান্দালয় জেলার সান পিয়া এবং কারেন প্রদেশের থান্ডুয়াঙ্গি শহরে। পিডিএফ জানিয়েছে, এ দুই এলাকায় জান্তা-বিদ্রোহী সংঘাতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন সেনা।

এছাড়া কারেন প্রদেশের একটি রত্নপাথরের পাথরের খনিও বর্তমানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে চলে গেছে।

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। তবে এই লড়াই নতুন গতি পেয়েছে ২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচিকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পরপরই ফুঁসে উঠেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনতা। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। কিন্তু মিয়ানমারের পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করার পর ২০২২ সালের দিকে গণতন্ত্রপন্থীদের একাংশ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দেওয়া শুরু করে।

২০২২ সালে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বেশিরভাগই সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির নেতৃত্বাধী রাজনৈতিক জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টে (নাগ) যোগ দেন। তারপর থেকে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী লড়াই নতুন মাত্রা পেয়েছে।

২০২৩ সালে বছরজুড়ে দেশের বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা। এসব এলাকার মধ্যে ভারত ও চীন সীমান্তও রয়েছে।

পাঠকের মতামত

দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রাখাইন, নতুন আশ্রয়প্রার্থীর আশঙ্কায় বাংলাদেশ

নজিরবিহীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতির সম্ভাবনা না থাকায় ...

আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশাল সুযোগ’ পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

মিসরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফুল-ফান্ডেড স্কলারশিপ ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ...

বাংলাদেশি কর্মী নিচ্ছে মালয়ে‌শিয়া, সর্বোচ্চ ব্যয় ৭৯ হাজার টাকা

মালয়েশিয়ায় প্ল্যান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। দেশটির সরকার প্ল্যান্টেশন সেক্টরের জন্য নির্বাচিত বাংলাদেশি ...